মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন

আপডেট
*** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***                     *** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***
সংবাদ শিরোনাম :

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর বিরুদ্ধে দেশের সকল মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের কোথাও এতটুকু জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের আলামত দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দিন। আমরা এ ধরণের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে আর দেখতে চাই না। বাংলাদেশকে উন্নত ও শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডসহ যৌন নিপীড়নের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রণয়ণ করা হবে। যারাই এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জড়িতরা কে কোন দলের তা দেখা হবে না। যৌন নিপীড়ন যারা করবেন তাদেরও রেহাই নেই। অনেকেই কঠোর আইনের কথা বলেছেন। আইন রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজন হলে কঠোর আইন করতে হয় আমরা করবো। তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয় সেই ব্যবস্থাই আমরা করবো।

সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে উত্থাপিত নিন্দা প্রস্তাব আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

‘নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ ও শ্রীলঙ্কার গীর্জা, হোটেলে সন্ত্রাসী হামলায় শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির নাতি জায়ান চৌধুরীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষকে হত্যা ও আহত করাসহ বাংলাদেশে ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রীর নুসরাতকে যৌন নিপীড়ন ও পুড়িয়ে মারার ঘটনায় আনা নিন্দা প্রস্তাবের উপর এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়, ‘এসব ঘটনায় সংসদ গভীর ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে এবং এ সকল সন্ত্রাসী, যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশের সংসদ, সরকার ও নাগরিকদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে’।

কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ (১) ধারায় এই নিন্দা প্রস্তাব আনেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। পরে সর্বসম্মতভাবে নিন্দা প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেনীতে নুসরাতকে পুড়িতে হত্যা করা হয়, যে কিনা তার উপর যৌন নিপীড়নের তীব্র প্রতিবাদ করে বলে তার নামে অপবাদ দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, আমাদের দলের কিছু নেতা-কর্মী এতে জড়িত ছিল, আমি তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিই। কাউকে ছাড়া দেয়া হবে না। শিক্ষক যদি রক্ষক না হয়ে তার ছাত্রীদের ভক্ষকে পরিণত হয়, তাহলে এটা কীভাবে সম্ভব। বিএনপি জামায়াতের অগ্নিস্ত্রাসের কারণে আজকে এরা মাদ্রাসার ছাত্রীকে পুড়িয়ে মারার সাহস পেয়েছে।

সংসদ নেতা বলেন, আমাদের পরিবারের উপরও সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু আমরা এর বিচার পাইনি। তাই বলে আমরা প্রতিহিংসায় বিশ্বা করিনা। আমরা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের ভোট আমরা চুরি করি করিনি। বিএনপি জনগণের ভোট চুরির নির্বাচন করে বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্নেল রশিদকে সংসদে এনে বিরোধী দলে বসিয়ে ছিল। জঙ্গিবাদ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী সমস্যা। শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় নিষ্পাপ শিশু জায়ান চৌধুরী নিহত হয়। প্রায় ৪২ জন বিদেশি মারা যায় ওই ভয়াবহ হামলায়। আত্মঘাতী সন্ত্রাসীরা এই হামলা করেছে। এ ধরণের জঘন্য ঘটনার আমরা নিন্দা জানাই। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণকে আহ্বান জানাবো, সকলকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে। হলি আর্টিজানে হামলার পর আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। গোয়েন্দা সংস্থা সঠিক সময়ে সংবাদ দিতে পারছে বলেই অনেক জীবন রক্ষা পাচ্ছে।

আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাবেকমন্ত্রী শাহাজান খান,ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের নির্বাহী সভাপতি মঈন উদ্দিন খান বাদল, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙা, সাবেকমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ঐক্য ফ্রন্টের সুলতান মোহম্মদ মনসুর আহমেদ, জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী, সরকারি দলের মেহের আফরোজ চুমকী বিএনপির সদ্য শপথপ্রাপ্ত এমপি হারুন উর রশিদ প্রমুখ।

এসময় তোফায়েল আহমেদ বলেন, এখানে জঙ্গি উত্থান শুরু হয়েছিল বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল। বাংলা ভাই, শায়েখ আবদুর রহমান, আমরা যখন পার্লামেন্টে কথা বলেছি তখন তারা বলেছিল এটা কাগুজে এটার সত্যতা নেই। হলি আর্টিজান ঘটনার পর যে দ্রুত গতিতে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি তৎপরতা কাযকর ব্যবস্থা গ্রহণ এত অল্প সময়ের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কেউ ভাবেনি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে, উন্নত দেশের দিকে যাচ্ছে তখন এসব অর্জনকে স্মান করতে দেশে এক শ্রেণির দেশদ্রোহী, জঙ্গিবাদীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এসময় তিনি সন্তাসবাদকে নির্মূল করতে দ্রুত বিচার আইন ও কঠোর শাস্তির বিধান প্রণয়নের আহ্বান জানান।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মাদ নাসিম বলেন, বিশ্বে আজ ধর্মের নামে রক্তের হোলি খেলা শুরু হয়েছে। নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি যা ঘটেছে তা ধর্মের নামে সন্ত্রাস। হলি আর্টিজমের ঘটনা এর বাইরে ছিল না। সারা বিশ্বে আজ এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এসময় তিনি সন্ত্রাস নির্মূলে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি এবং নুসরাত হত্যাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দ্রুত বিচার আইনে ফাঁসির দাবি জানান।

শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার নাতি জায়ানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ব আজ মানবতাহীন হয়ে উঠেছে। ইসলাম ধর্মে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিশ্বাস করে না। তবুও ইসরাইলের মদদ পুষ্ট আইএসআই বিশ্বে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি এসময় বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নির্মূলে কঠোর আইন প্রয়োগের আহ্বান জানান। ধর্ষণের অপরাধ স্বীকারকারীদের ফায়ারিং স্কয়ার্ডে বিচার চান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেন, এই সব অপকর্মের হোতা হচ্ছে ফেসবুক।

সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, সন্ত্রাসবাদ আজ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তবে আমাদের দেশে তা আমরা নির্মূল করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। কিন্তু এখন প্রয়োজন জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এসব অপরাধের জরুরি ভিত্তিতে বিচার করে শাস্তি দেয়া। সেই সাথে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক সকলকে আরো জোরাল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সংসদে বসার সুযোগ করে দেয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ক্রাইস্টাচার্চে এবং শ্রীলঙ্কার গীর্জায় সম্প্রতি যে দু’টি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেছে তাতে প্রথমটিতে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য এবং দ্বিতীয় টিতে ধর্মীয় বিদ্বেষের উলঙ্গ প্রকাশ ঘটেছে। এখানে তিনি সন্ত্রাস, ধর্ষণ, নারী-শিশু নির্যাতনের যদি সঠিক বিচার হতো তাহলে এ ধরনের ঘটনা কমতো।

তিনি বলেন, বর্তমানে ধর্মকে রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। যার কারণে মৌলবাদের উত্থান আবারো ঘটছে।  তিনি এসব বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানান।

জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তিন মাসের মধ্যে বিচারের দাবি জানান।


Search News




©2020 Daily matrichaya. All rights reserved.
Design BY PopularHostBD