বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৩ অপরাহ্ন
প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদানের বিষয়টি প্রায়ই খবরের শিরোনাম হয়। সোমবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক সচিত্র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার আরপিএন শহীদ শাহ্জাহান কবির উচ্চবিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান চলছে।
বর্তমানে সারা দেশে তীব্র গরমের কারণে মানুষ যখন ঘরের ভেতরে থেকেই চরম অস্বস্তি অনুভব করছে, তখন ওই উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে পাঠ গ্রহণ করতে গিয়ে কতটা কষ্ট পাচ্ছে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। জানা যায়, চৌহালী উপজেলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষার সুবিধার জন্য ১৯৭১ সালে আরপিএন শহীদ শাহ্জাহান কবির উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরে ১৯৯৪ সালের দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের অর্থায়নে একতলা একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, আর শিক্ষক রয়েছেন ৯ জন। ২০১৬ সালে একটি ভবনের ছাদ ও বিম ধসে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এরপর থেকেই ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
গত বছরের আগস্টে ছাদের পলেস্তরা খসে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পেয়ে তৎকালীন ইউএনও, এলজিইডি ও শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে বিমে ফাটল ধরা ও পলেস্তরা খসে পড়া ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। এরপর দীর্ঘ নয় মাস অতিবাহিত হলেও পরিত্যক্ত ভবনটি অপসারণ কিংবা নতুন ভবনের নির্মাণকাজ এখনও শুরু হয়নি। শ্রেণীকক্ষের সংকটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়টির পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। প্রচণ্ড রোদ কিংবা বৃষ্টির কারণে স্বাভাবিকভাবেই এ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
কেবল আলোচিত বিদ্যালয়টিই নয়, সারা দেশে এ রকম অনেক বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে শ্রেণীকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। বর্তমান সরকার শিক্ষা খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পরও কেন এত বিদ্যালয়ে ভবন কিংবা শ্রেণীকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান চলছে, এটা এক প্রশ্ন। অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে কোনো বিদ্যালয়ে যাতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত না হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
কারণ শিক্ষার ভিত মজবুত না হলে পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে। আরপিএন শহীদ শাহ্জাহান কবির উচ্চবিদ্যালয়সহ দেশে এ ধরনের যত বিদ্যালয় রয়েছে, সেগুলোর অবকাঠামোগত সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে, এটাই কাম্য।