শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন
আসন্ন রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচন উপলক্ষে সরকারের যেকোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অনুমতি ছাড়া বদলি না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংস্থাটির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত নির্দেশনাটি রিটার্নিং কর্মকর্তা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক, সব সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে- গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-১৯৭২ অনুযায়ী, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের পূর্বানুমতি ব্যতিত কাউকে কর্মস্থল থেকে বদলি করা যাবে না। এছাড়াও নির্দেশনায় বলা হয়েছে- সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৫(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনের সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের অবশ্য কর্তব্য। নির্বাচনী সময়সূচি জারির পর নির্বাচনী কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইন ১৯৯১ এর ৪(৩) ধারা অনুযায়ী নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারী স্বীয় চাকরির অতিরিক্ত হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে নিয়োজিত আছেন বলে বিবেচিত হবে। আর কোনো ব্যক্তি নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হলে তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাকে নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে কোনো দায়িত্ব পালনের বিষয়ে কোনো বাধা দিতে বা বিরত রাখতে পারবে না।
১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোট কর্মকর্তা প্যানেল: রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনের জন্য আগামি ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনে শিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তারাই বেশি সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে- প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তাদের ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগ করতে হবে। এজন্য একটি প্যানেল প্রস্তুত করে ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে হবে। অন্যদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এই আসনটিতে যেসব কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল, উপ-নির্বাচনেও সেসব ভোটকেন্দ্রই রাখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। তবে কোনো ভোটকেন্দ্র কোনো প্রার্থীর পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবাধীন হলে তা কমিশনকে জানানোর জন্য বলা হয়েছে। আবার বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তথ্যও নির্বাচন কমিশনকে অবিহত করতে হবে। আর এই ধরনের ভোটকেন্দ্রে অভিজ্ঞ প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য বলা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্যানেল প্রস্তুত করা হয়, যাতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা না হয়। কেননা, বিভিন্ন কারণে অনেককেই তালিকা থেকে বাদ দিতে হয়। অনেকেই আবার বিভিন্ন অসুবিধার কারণে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরাশাদের শূন্য ঘোষিত রংপুর-৩ আসনে আগামি ৫ অক্টোবর উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পুরো নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১১ সেপ্টেম্বর। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৬ সেপ্টেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আগামি ১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আপিল গ্রহণ করা হবে। আপলি নিষ্পত্তি করা হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। এ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে রংপুরের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নিয়োগ করা হয়েছে। সাবেক সামরিক শাসক এইচএম এরশাদ গত ১৪ জুলাই চিকৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মার যান। এ অবস্থায় সংসদ সচিবালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) আ. ই. ম গোলাম কিবরিয়া ১৬ জুলাই আসনটি শূন্য হওয়ার গেজেট প্রকাশ করেন। এরপর রাববার আসনটিতে ভোটগ্রহণের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। রংপুর-৩ আসনটি সদর উপজেলা এবং ১ থেকে ৮ নম্বর ছাড়া রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৭৬২ জন।