মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:০৫ অপরাহ্ন

আপডেট
*** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***                     *** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***

সিলেট জেলা আ.লীগের সম্মেলন, নেতৃত্বে আসতে পারে পরিবর্তন!

সিলেট জেলা আ.লীগের সম্মেলন, নেতৃত্বে আসতে পারে পরিবর্তন!

সিলেট অফিস : আগামী ৫ ডিসেম্বর সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছাস দেখা দিয়েছে। সম্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। এদিকে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হওয়ার পর ব্যাপক সাড়া পড়েছে তৃণমূলে। তৃণমূলের মতামত ও সমর্থনের মাধ্যমে সিলেটের আগামী নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। যার ফলে আগামীর নেতৃত্ব নির্ভর করে তৃণমূলের জনপ্রিয়তার উপর। তবে ধারণা করা হচ্ছে এবারের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আসবে!দীর্ঘদিন ৮ বছর ধরে সম্মেলনের জন্য দায়িত্বশীল নেতাদের তাগিদ দিয়ে আসছিলেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। অবশেষে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে সবকটি মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিতে সম্মেলনের জন্য আহ্বান করা হয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সিলেটে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আসেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভায় আগামী নভেম্বরের শেষ দিকে এ সম্মেলন হবে বলে জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। অবশেষে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সভায় ৫ ডিসেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের তারিখ ঘোষনার পরপরই পদ প্রত্যাশীরা পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে শুরু করেছেন লবিং তদবীর। এরইমধ্যে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েস, সহ সভাপতি ও সাবেক জকিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ এবং বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী। এছাড়াও সভাপতি পদপ্রত্যাশী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে সদর উপজেলার হ্যাট্রিক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমদ।

সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, নিজাম উদ্দিন, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোশাহিদ আলীর নাম শোনা যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক পদে সকলই হ্যাভিওয়েট প্রার্থী।

সভাপতি পদে তৃণমূলের পছন্দ অনুযায়ী জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে সিলেটে পরিচিত। এমনটাই বলছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও মন্ত্রী ইমরান আহমদের ভালো সখ্যতা রয়েছে। যার কারনে অনেকেই ভাবছেন- দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা হয়তো মন্ত্রী ইমরান আহমদকেই সভাপতির দায়িত্ব দেন। তবে- স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীরা ভাবছেন, এমপি ইমরান আহমদ প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির চেয়ে অনেক বড় গুরু দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। তাই এই বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব দেওয়া হলে অনেকটা চাপ প্রয়োগ করা হবে।

সভাপতি পদে অন্যজন হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েস। তিনি বিভিন্ন সময়ে আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন। নির্বাচন এলেই তাকে ‘রাজাকারপুত্র’ উল্লেখ করে অনেকটা সমালোচনা সৃষ্টি করা হয়। আবার নির্বাচন চলে গেলেই মুখোশধারীরা খোলস পাল্টে আবারও তার সাথে আতাঁত গড়ে তুলে। তবে- তৃণমূল কর্মীদের জনপ্রিয়তার অন্যতম স্থানে রয়েছেন এমপি কয়েস। মন্ত্রী ইমরান আহমদের পরেই নেত্রীর পছন্দের প্রার্থী তালিকায় আছেন জেলা আ.লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক জকিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। তিনি একাধিকবার সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়েও দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে সরে দাঁড়ান। পাশাপাশি নৌকাকে বিজয়ী করতে সিলেট ও কানাইঘাট-জকিগঞ্জ আসনেও তিনি কাজ করেছিলেন। তাই এর প্রতিদানস্বরূপ তৃণমূল নেতাকর্মীরা তাকে সভাপতির আসন বসাতে পারেন এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। তবে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে জেলার সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী হ্যাভিয়েট প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন। দীর্ঘদিন দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে খুব ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। কর্মীদের দুর্দিনে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন বীরের মতো। তাই তৃণমূল কর্মীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন শফিকুর রহমান চৌধুরী।

কমিটি প্রসঙ্গে সভাপতি প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তা যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি। নিশ্চিত বিজয় জেনেও দু’বার নেত্রীর নির্দেশে সংসদ সদস্য থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। আগামীতেও নেত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমি তা মাথা পেতে নেব।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমদ বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দলের আদর্শ বুকে ধারণ করে দলের জন্য কাজ করেছি। শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে কমিটি হবে। তিনি যার হাতে নেতৃত্ব দিবেন তার মাধ্যমে কাজ আজীবন দলের জন্য কাজ করে যাব। তবে সিলেট আওয়ামী লীগকে বাচিঁয়ে রাখতে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মোশাহিদ আলী বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় সিলেট আওয়ামী লীগে একদিকে নতুন নেতৃত্ব ওঠে আসছে না, অন্যদিকে সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। তৃণমূলের নেতারা সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে আমাকে অনুরোধ জানাচ্ছেন। তবে, শেখ হাসিনা সকল সিদ্ধান্তের মালিক। তিনি যদি আমাকে সম্পাদক করেন তাহলে তৃণমূল নেতাদের নিয়ে দলের জন্য কাজ করে যাব। শাহ মোশাহিদ আলী আগামী ৫ ডিসেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে আগামীর নেতৃত্ব আসবে বলে দাবী করেন। এ ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দেবেন আমি তা মাথা পেতে নিব এবং তা যথাযথ পালনে কাজ করে যাবো।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বলেন, রাজনীতিতে সবাই পরিবর্তন চায়,আমিও পরিবর্তনে বিশ্বাসী। দীর্ঘ ৮ বছর জেলা আওয়ামী লীগ এক কমিটি দিয়ে পাড় করেছে। সম্মেলন হলে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় নেতারা ঠিক করবেন কাউন্সিল না মতামতের ভিত্তিতে কমিটি হবে। নেত্রী, কেন্দ্রীয় নেতা বা তৃণমূলের নেতারা আমাকে কোন দায়িত্ব দিলে অতীতে যেভাবে দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছি ভবিষ্যতেও আপ্রাণ কাজ করে যাব।এবং আমি আশা করি আমার অতীতের রাজনৈতিক কর্মকা-ের উপর বিবেচনা করে আমাকে তৃনমুল পর্যায়ের নেতা কর্মী সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে মনোনীত করবেন। উল্লেখ্য: সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয় ২০১১ সালের ২১ নভেম্বর। পরদিন উভয় শাখায় ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়। ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই সময় আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ানকে সভাপতি ও শফিকুর রহমান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষণা করা হয় জেলা কমিটি। ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান মারা গেলে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। পাশাপাশি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ।


Search News




©2020 Daily matrichaya. All rights reserved.
Design BY PopularHostBD