শুক্রবার (১ নভেম্বর) বেলা ১১টায় তেজগাঁওয়ে এফডিসিতে ‘আবরার হত্যাকাণ্ডের জন্য ছাত্র রাজনীতি না মূল্যবোধের অবক্ষয় কোনটি দায়ী’ শীর্ষক এক ছায়াসংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে এসব কথা বলেন মনিরুল ইসলাম।
আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিল কি না জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়নি। কিন্তু আমাদের একটা প্রতিবন্ধকতা তো ছিলই। তা হচ্ছে সঠিক তথ্য বা উপযুক্ত তথ্যের প্রতিবন্ধকতা।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার রাতে টহল পুলিশের দল কোনো মাধ্যমে তথ্য পেয়ে সেখানে যায়। কিন্তু অনুমতি ছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করা যায় না-এমন একটা নিয়ম ছিল। কিন্তু পুলিশ যদি ওই রাতে সঠিক তথ্যটি পেত যে, আবরার নামে কোনো ছাত্রকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করা হচ্ছে, তাহলে অবশ্যই পুলিশ ওই নিয়মকে অমান্য করে ভেতরে অবশ্যই প্রবেশ করতো। কারণ তখন নিয়মের চাইতে আইন মান্য বেশি জরুরি ছিল।’
‘আববার হত্যাকাণ্ডের পরই পুলিশ ১০ জনকে আটক করে। পরে জানা যায়, তারা সবাই ওই মামলার আসামি এবং হত্যা মামলায় ১৯ জন আসামির বাইরেও তদন্তে বেশ কয়েকজনকে জড়িত পাওয়া গেছে। ১৯ আসামি হলেও এখন পর্যন্ত আমরা গ্রেফতার করেছি ২১ জনকে। এদের মধ্যে অনেকেই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই হত্যায় কার কী দায় বা ভূমিকা ছিল সেটা বলেছেন। আমরা আবরার হত্যা মামলার চার্জশিট নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই দাখিল করব। সেখানে প্রাসঙ্গিক ডকুমেন্ট হিসেবে সিটিটিভি ফুজেটও দাখিল করা হবে।’
মেধাবী মাত্রই আমরা মূল্যবোধ সম্পন্ন বিবেকসম্পন্ন বলতে পারি না বলে মন্তব্য করেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কাগুজে নম্বরে তাই অনেককে আমরা মেধাবী আখ্যা দিলেই প্রকৃত মেধাবী তারাই যাদের মূল্যবোধ রয়েছে। দেশের প্রতি মানুষের প্রতি সমাজের প্রতি পরিবারের প্রতি দায় রয়েছে। আর এই মূল্যবোধ পর্যায়ক্রমে তৈরি হতে থাকে।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘আবরার হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত বেদনার, কষ্টের। আমাদের আশ্চর্য করেছে কীভাবে সহপাঠী তার সহপাঠীকে, এক ছাত্র আরেক ছাত্রকে হত্যা করল। তা-ও আবার বুয়েটের মতো শিক্ষাঙ্গনে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, তদন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থা যেন এই হত্যাকাণ্ডে নুসরাত হত্যার মতো একটি নির্ভুল চার্জশিট দাখিল করে। কোনো অপরাধী যেন ছাড় না পায়।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে ছায়া বিতর্কে অংশ নেয় তেজগাঁও কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজ।