রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি :
করোনায় মৃত এক নারীকে নিজ হাতে গোসল করিয়ে দাফন দিয়েছে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)খালেদা খাতুন রেখা। করোনার ভয়ে মৃত নারীর স্বজনরা লাশ ফেলে রেখে গা ঢাকা দিয়েছিল। এগিয়ে আসেনি পাড়া-প্রতিবেশী কেউ। এ খবর পেয়ে ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা নিজ হাতে মৃত মহিলাকে গোসল করিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন। ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রসংশায় ভাসছেন ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার উজিয়ালখান গ্রামের বাসিন্দা রেখা আক্তার (৪৫) শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে করোনা আক্রান্ত হবার ভয়ে মৃত নারীর স্বজনরা লাশ ফেলে রেখে গা ঢাকা দেয়। লাশ গোসল বা দাফনের জন্য এগিয়ে আসেনি কোন প্রতিবেশী। এ খবর পেয়ে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)খালেদা খাতুন রেখা
রাতে গোসলের ব্যবস্থা করেন। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নিজ হাতে গোসল শেষে কাফনের কাপড় পড়ানো হয় সেচ্ছাসেবী মাহাফুজা মিলি এবং শামীমা আক্তার এর সহযোগীতায়। পরে তাকে রাত ১২টার দিকে কাউখালী উজিয়ালখান গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ খালেদা খাতুন রেখার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। করোনায় মৃত নারীর লাশ গোসল করানো সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ প্রশংসা করে।
কাউখালী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৃদুল আহম্মেদ সুমন বলেন, করোনায় মৃত নারীর দাফনের ব্যবস্থা করে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি করোনাকালের শুরু থেকে গর্ব করার মতো মহতী কাজ করে চলেছেন। তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদা খাতুন রেখা জানিয়েছেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই যে বাড়িতে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির লাশ পৌছেছে অনেক আগেই। কিন্তু পরিবার বা প্রতিবেশী কেউ আক্রান্ত হবার ভয়ে এগিয়ে আসছেন না। পরে আমি নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগীতায় লাশ গোসল শেষে দাফন সম্পন্ন করি। এটি মানুষ হিসেবে মানবিক দায়িত্ব। তবে করোনায় কেউ মারা গেলে সংক্রমণের ভয় থাকা ভুল ধারনা। মানুষের সচেতন হওয়া উচিত। আমরা এক কঠিন দুঃসময় পার করছি।