বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
সুমন হোসাইন: যশোরের দক্ষিণ বঙ্গের সর্ববৃহৎ শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাতমাইল পশুহাট। কুরবানির গরু ও ছাগল কিনতে দূর দূরান্ত থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে সরগম হয়ে উঠেছে এই হাট। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু ব্যবসায়ী পাইকারি দামে পশু কিনতে ভিড় জমান এই হাটে। কিন্তু এবার পশু হাটকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার দুই দিন হাটে চলে কেনা বেচা। শার্শা উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে চলছে এই হাট। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে পশু হাটের কারনে ণাভারন-সাতক্ষীরা সড়কে যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে সাধারণ মানুষ এ দূর্ভোগ পোহালেও কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। অবৈধভাবে রাস্তার উপর চলছে গরু বেচা-কেনা। হাটটি থেকে লাখ লাখ টাকা ভ্যাট আদায় হলেও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই। পশু প্রতি সরকার নির্ধারিত ভ্যাট আদায় করার নির্দেশ থাকলেও হাট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দ্বিগুন অর্থ আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। পশু হাটটি পরিচালনা করলেও সেখানে আধিপত্য রয়ে গেছে ক্ষমতাসীন দলের একটি পক্ষের। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গরু প্রতি ভ্যাট ৫০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ভ্যাট ২০০ টাকা নির্ধারন থাকলেও হাট কর্তৃপক্ষ ক্রেতাদের নিকট হইতে গরু প্রতি ১২০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ৫০০ টাকা ভ্যাট আদায় করছে। এছাড়াও গরু প্রতি ১৫শ ও ১৮শত টাকা নিলেও ভ্যাট স্লিপে ১০০০ টাকা দেখানো হচ্ছে। এদিকে বিগত সময়ে ইজারার দায়িত্বে থাকাকালিন সময়ে প্রতি হাটে ১০ লাখের বেশি সরকারি খাতে ভ্যাট আদায় হলেও এখন উপজেলা প্রশাসন দায়িত্ব নিয়ে আদায় দেখাচ্ছে ৩ লাখ টাকা। ফলে বিপুল পরিমানে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
শার্শার গরু ক্রেতা আমিনুল জানান, লাখ টাকার কিছু বেশিতে তিনি কোরবানির জন্য একটি গরু কিনেছেন। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৫০০ টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও হাট কর্তৃপক্ষ ১৫০০ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু ইজারা স্লিপে লিখেছেন ১০০০ টাকা। বেনাপোল পৌরসভার গরু ক্রেতা লিটন হোসেন জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গরু প্রতি ভ্যাট ৫০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ভ্যাট ২০০ টাকা নির্ধারন থাকলেও হাট কর্তৃপক্ষ গরু ১২০০ টাকা ও ছাগল ৫০০ টাকা করে ভ্যাট আদায় করছে। গরু ক্রেতা সিরাজুল ইসলাম জানান, এই পশু হাটের কারণে সবসময় গরুর মল ও আবর্জনা রাস্তার উপর জমে থাকছে এছাড়া গরু বহনকারী ট্রাক,নসিমন,করিমনের ভিড়ে পথচারী ও যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তার উপর ব্যবসায়ীদের গরু বেচা-কেনার সুযোগ করে দিয়ে একটি মহলটি প্রতিদিন লাখ-লাখ টাকা আয় করছে। উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রন করার কারনে কেও অভিযোগ করছে না।
বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক জানান, বিগত দিনে এই পশু হাট ইজারাদারের হাতে ছিল তখন প্রতি হাটে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা সরকারের খাতে রাজস্ব আয় হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনের হাতে থাকায় সর্বচ্চ ৩ লাখ টাকা রাজস্ব আয় কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি এলাকার উন্নয়ন কাজ ব্যহত হচ্ছে।
রাস্তার উপর পশু বিক্রয়ের ব্যাপারে শার্শার নাভারন হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক সিদ্ধার্থ সাহা জানান,পথচারীদের দূর্ভোগ এড়াতে সড়কের গাঁ ঘেষে বা উপরে গরুর হাট বসানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সড়কের উপর গরু বেচাকেনা হলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনিয়মের বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন,অতিরিক্ত ভ্যাট আদায়ের বিষয়ে আমাদের নিকট কোন ক্রেতা অভিযোগ করেনি। সড়কের উপর গরু বিক্রয়ের ফলে যানজটের কথা শিকার করে জানান, সড়কের উপর যাতে যানজট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে ।