সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৮ অপরাহ্ন
সুমন হোসাইন:দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল পৌরসভাধীন ২নং ওয়ার্ড দূর্গাপুর গ্রামের “উদয়ন সংঘ” সেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঈদের দিন রাতে গ্রামের সকল পেশাজীবি মানুষদের নিয়ে নানা গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার ভিন্ন এক আয়োজন করা হয়।
১৭ই জুন (সোমবার) ঈদুল আজহার দিবাগত রাতে দূর্গাপুর উত্তর পাড়া মাঠে ভিন্ন এক আয়োজনের মধ্যে ঈদ আনন্দ উপভোগ করলো গ্রামবাসি। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দূর্গাপুর গ্রামের কৃতি সন্তান বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ও সমাজসেবক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব মোঃ মফিজুর রহমান। এসময় উপস্থিত মাঠের চারদিকে দর্শকদের উল্লাসে মাইকে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ বিভিন্ন খেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার মধ্যে ছিলো হাঁড়ি ভাঙা,বালতিতে বল নিক্ষেপ, রশি টানাটানি, তৈলাক্ত কলা গাছে উঠা, মোরগ লড়াই, দৌড়, বেলুন ফাটানো সহ প্রধান আকর্ষণ বিবাহিত অবিবাহিত ফুটবল টুর্নামেন্ট। রাতে সম্পূর্ণ মাঠ লাইটিং করে এই খেলাগুলো সম্পন্ন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন দূর্গাপুরের কৃতিসন্তান শিক্ষক বাসেদ আলী মল্লিক, বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং সমাজসেবক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, দূর্গাপুরের কৃতি সন্তান এবং খেলা প্রেমী ফারুক হোসেন, আনিছুর রহমান, আলী কদর, রফিকুল ইসলাম সহ অনেক গুনি ব্যক্তিত্ব।
বিভিন্ন এলাকা থেকে খেলা দেখতে আসা একাধিক ব্যাক্তি জানান, ঈদের দিন রাতে লাইটিং করে এত সুন্দর পরিবেশে ঐতিহ্যবাহী খেলার আয়োজনের মাধ্যমে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করার যে অভিনব আয়োজন তা আগত সকলকে মুগ্ধ করেছে। এছাড়াও মাঠে খেলা দেখতে আসা নামাজগ্রামের বাসিন্দা শাফায়েত বলেন, ঈদের দিন গ্রামের মানুষকে বিনোদন দিতে এমন আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। খেলা দেখে তিনি অনেক আনন্দ পেয়েছেন। বিশেষ করে দড়ি টানাটানি খেলা বেশ উপভোগ্য ছিল। খেলার ব্যাপারে শাফায়েত বলেন,খেলাটি মূলত শক্তি পরীক্ষার পেশিশক্তির পাশাপাশি প্রচন্ড বল প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। গ্রামের মানুষ দুই দলে ভাগ হয়ে মোটা ও লম্বা একটি দড়ির দুই দিকে শক্ত মুঠোয় ধরে নিজেদের দিকে টানতে থাকে। মাঝখানে দাগ দেওয়া থাকে। টেনে এনে প্রতিপক্ষকে সেই দাগ পার করতে পারলেই জয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, বিবাহিত অবিবাহিত ফুটবল খেলাটি আমদের এলাকার ঐতিহ্য। যেটা বহু বছর ধরে চলে আসছে এবার যুক্ত হলো গ্রামীণ একাধিক খেলা। বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এমন আয়োজন। এলাকাবাসী আশাতীত সাড়া দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এমন উৎসব আরও বড় করে আয়োজন করা হবে।
দূর্গাপুর উদয়ন সংঘের আয়োজনে এত সুন্দর একটা অনুষ্ঠান যাদের নিরলস প্রচেষ্টায় সম্পন্ন হয়েছে তারা হলেন, মফিজুর রহমান, বাবলু হোসেন, রিপন হোসেন, আক্কাস আলী, আমানুর রহমান, শাকিরুল ইসলাম, রজব, রানা, রনি, শাওন সহ আরও অনেকে।
খেলা দেখতে আসা বেনাপোল এলাকার বাসিন্দা ও প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক দ্বিন ইসলাম বলেন, একসময় গ্রামগঞ্জে নিয়মিতই এমন খেলাধুলার আয়োজন হতো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। এমন আয়োজন হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে খেলা উপভোগ করার সুযোগ হয়। তরুণ-তরুণীদেরও খেলায় অংশ নেওয়ার আগ্রহ তৈরি হয়। বর্তমান সময়ে মুঠোফোনের আসক্তি দূর করতে এমন খেলার আয়োজন বারবার দরকার।