শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন
বেনাপোল প্রতিনিধি:
স্যার সম্মোধন না করাই তথ্য না দিয়ে সাংবাদিকদের সহিত অশোভন ব্যাবহার করে রুম থেকে বের করে দিয়েছেন বেনাপোল স্থল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম। এ ঘটনায় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার শার্শা প্রতিনিধি ও দৈনিক নওয়াপাড়া পত্রিকার প্রতিনিধি ভূক্তভোগী সাংবাদিক সুমন হোসাইন জানান,বেনাপোল স্থলবন্দরের চলমান অনিয়ম ও অব্যবস্থপনা নিয়ে বক্তব্য নিতে রোববার (৭জুলাই ) দুপুর ১২টার দিকে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় পরিচালক রেজাউল করিম তাদের পরিচয় জানতে চাই। কথোপোকথনের ভিতর রেজাউল করিম সাংবাদিক সুমনকে স্যার বলে সম্মোধন করে কথা বলতে বলে জানান,আপনি সরি বলে স্যার ডাকলে তথ্য দিবো না হলে চলে যেতে পারেন। এমনকি আপনার যা মনে চাই তাই লিখতে পারেন। এ সময় তার সাথে থাকা যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক বাংলার ভোর পত্রিকার বেনাপোল প্রতিনিধি মেহেদী মাসুদ শাকিল বন্দর পরিচালকের অশোভন আচরন মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে বেনাপোল স্থল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম গতকাল সাংবাদিক সুমনের সাক্ষাৎকারের সত্যতা নিশ্চিত করে মুঠোফোনে জানান, স্যার ডাকা নিয়ে তার সাথে আমার কোন কথা হয়নি। আমি ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি দেখেছি। আমি তাকে বলেছি আপনি যাচাই বাছাই না করে মনগড়া কথা লিখতে পারেন না। তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশের কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন অনেক সাংবাদিককেই তো তথ্য দিই।
বেনাপোল বন্দর পরিচালকের এমন অশোভন আচরনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতী দিয়েছেন বেনাপোল পৌর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে কোথাও লেখা নেই সাংবাদিকদের সরকারী আমলা,উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের স্যার সম্মোধন করতে হবে। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এহেন আচরন কখনোই কাম্য নই। সাংবাদিক সমাজের পক্ষ হতে আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি সাথে সাথে বিষয়টিতে স্থল বন্দরের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সরকারী কর্মকর্তাদের সহিত সাংবাদিকদের অশোভন আচরনের মাত্রা বহুগুন বেড়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গনমাধ্যমকে বলেছেন,সরকারী কর্মচারীরা জনগনের সেবক। তাদের স্যার বা ম্যাডাম ডাকার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এসময় তিনি সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদের কথা তুলে ধরে বলেন,যেখানে বলা আছে প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগন এবং জনগনের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য বেনাপোল স্থল বন্দরে সাম্প্রতিক সময়ে অনিয়ম অব্যবস্থপনার মাত্রা তীব্র হয়ে ওঠেছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক পত্র-পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে খবর প্রকাশ হয়েছে। খোদ পরিচালক রেজাউল করিমের নামে দুদকে থাকা একাধিক মামলা ও অনিয়ম নিয়ে খবর প্রকাশ হয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ১৪টি পয়েন্ট হতে প্রকাশ্য চাঁদাবাজি হওয়া,বহিরাগত লোকদ্বারা শেড পরিচালনা করা, ফরক্লিপ-ক্রেনসহ নানা ইকুপমেন্ট অকেজো থাকায় বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহতের অভিযোগ নিয়ে একাধিক খবর প্রকাশিত হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে এসব দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারনে বন্দর পরিচালক রেজাউল করিমের রোষানালে পড়েছে ভূক্তভোগী সাংবাদিকরা।