শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ অপরাহ্ন
সুমন হোসাইনঃ
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের এনজিও বাবুল মিয়ার (৪০) বিলাস বহুল গাড়ীর ছবি পাঠিয়ে দুই লক্ষ টাকা চেয়েছেন দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে মেহেদী হাসান। এনজিও বাবুলের নামে দুদক চিঠি ইস্যু করেছে জানিয়ে দপ্তর থেকে চিঠি সরাতে ২ লাখ টাকা দাবি করে হোয়্যাটঅ্যাপ নাম্বারে ম্যাসেজ করেছেন মেহেদী হাসান নামের ঐ কর্মকর্তা। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভূক্তভোগী এনজিও কর্মী বাবুল জানান,তার কাছে প্রেরিত চিঠিটা দুদকের নই। তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে দুদকের ভূয়া চিঠি বানিয়ে তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় কাস্টমস পাড়ায় শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে। প্রেরিত চিঠির রহস্য জানতে চুলচেরা বিশ্লেষন চলছে এনজিও কর্মিদের মধ্যে। দুদকের চিঠি প্রেরিত হোয়াটঅ্যাপ নাম্বারে (০১৬০২১২৭৩১৬) কল দিলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রেরিত চিঠিতে উল্লেখিত বাবুল মিয়ার গাড়ি থাকার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দেখা যায় নড়াইল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি। বিশ বছরের অধিক সময় ধরে তিনি বেনাপোলে বসবাস করেন ও বেনাপোল কাস্টমস কর্মকর্তাদের ব্যাক্তিগত সহযোগী হিসাবে এনজিওর কাজ করেন। বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কাজের সুবাধে তিনি স্বল্প সময়ে প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক বনে যান। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যলয় এর উপ-পরিচালক মোঃ রাশেদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠির স্মারক নং-০১,০০০০,১০৩.৭১.০০১.৭২.০০১.১৯-১২০ ও নথি নং:০৪,০১,০০০০.১০৪,৭২.০০১.১৯.৪৪৮২৭।
চিঠি ছাড়াও তার প্রিমিও গাড়ীর নাম্বার ঢাকা মেট্রো-খ-৪১-৪৯৯৮ উল্লেখ থাকলেও তার আনুমানিক ২২ লাখ টাকা মূল্যে ক্রয়কৃত বিলাসবহুল গাড়ীর নাম্বার ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-০৯৭১। ঘটনার পরপরই ইতিমধ্যে বাবুল মিয়া গাড়িটি বিক্রির জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন বলে নিশ্চিত করেন প্রাইভেটটির চালক জাকির হোসেন। এ বিষয়ে এনজিও বাবুলের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তার প্রিমিও গাড়ী থাকার কথা স্বীকার করে জানান, ধার দেনা ও কাস্টমস অফিসারদের সহযোগীতাই তার সংসারজীবন চালাতে তিনি প্রাইভেট কারটি ক্রয় করেন।
উল্লেখ্য বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কর্মরত কর্মকর্তাদের সহযোগী হিসাবে বহিরাগত আনুমানিক শতাধিক এনজিও কর্মী বেনাপোল কাস্টমস হাউজে দীর্ঘ বৎসর ধরে কাজ করে আসছেন। এরা বিভিন্ন সময়ে আমদানীকারকদের প্রতিনিধি হিসাবে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীদের দাখিলকৃত পণ্য ছাড় করানোর ফাইল আটকিয়ে কৌশলে ঘুষের টাকা উত্তোলন করে থাকে। আমদানীকারকরা কাস্টমসের হয়রানী এড়াতে বাধ্য হয়েই বাড়তি ঘুষের টাকা দিয়েই পণ্য চালান ছাড় করিয়ে নেন। বেনাপোল স্টেশনে এনজিও কর্মীদের অবৈধ ঘুষ বানিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে অনেক আমদানি কারক এ পথে ভারত হতে পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পত্র পত্রিকায় লেখালেখী হলেও এনজিও কর্মীদের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেননী বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।