বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:০০ অপরাহ্ন

আপডেট
*** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***                     *** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***

পৌর মেয়রের দৌরাত্বে অতীষ্ট পৌরবাসী!

পৌর মেয়রের দৌরাত্বে অতীষ্ট পৌরবাসী!

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর-এ-আলম সিদ্দিকীর দৌরাত্বে পৌরবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশে ক্ষুদ্ধ হয়ে তিনি তুলকালাম কান্ড ঘটিয়েছেন। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) উপস্থিতিতে মেয়রের উষ্কানিতে তার বাহামভূক্ত বেশকিছু লোকজন স্থানীয় আবু বকর সিদ্দিকীর বাড়ির টিনের বেড়া ভাঙচুরে উদ্যত হয় এবং পৌরমেয়র নিজেও আবু বকরের ছেলে লেবু মিয়াকে চরÑথাপ্পর মারে। এসময় তার বাহামভূক্ত লোকজন আবু বকর সিদ্দিকীর বাড়ির টিনের বেড়ায় লাঠিসোটা নিয়ে আঘাত করলেও পুলিশ প্রশাসনকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়।

একটি নতুন রাস্তা বের করাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনাটি ঘটান। এসময় পৌর মেয়র ওই বাড়ীর মালিক আবু বকর সিদ্দিকীকে ধরে হেস্তনেস্ত করতে চাইলে তার ছেলে লেবু মিয়াসহ আরো ২-৩ জন আহত হন।

জানা যায়, বুধবার সকালে এলেঙ্গা পৌরসভার পক্ষ থেকে আবুবকর সিদ্দিকীর বাড়ির সীমানা নির্ধারণ করার  একপর্যায়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

এ সময় পৌর মেয়র নুর-এ-আলম সিদ্দিকী উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আপনাদের সেবা করতে এসেছি। এসময় তিনি ও তার বাহামভূক্ত লোকজন সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর মামলা তুলে নেয়া না হলে আবুবকর সিদ্দিকীকে এলাকাছাড়া করার হুশিয়ারি দেন।

উত্তেজনার এক পর্যায়ে পৌর মেয়রের ভাই সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, আমার ভাইয়ের নামে যদি কেউ দূর্নীতির কোন প্রমাণ দিতে পারেন তাহলে সে পৌর মেয়র থেকে পদত্যাগ করবেন। এলেঙ্গাতে গুন্ডামি করলে তাদেরকে যমুনায় ডুবিয়ে দেয়া হবে। এসময় তাহার বাহামভূক্ত লোকজন আবুবকর সিদ্দিকীর বাড়ির বাউন্ডারির টিনের বেড়া ভাঙচুর করে।

ইতিপূর্বে এলেঙ্গা পুরাতন ভূঞাপুর রাস্তার থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সড়ক পর্যন্ত ১০ফুট চওড়া রাস্তা বের করার জন্য এলেঙ্গা পৌরসভা উদ্যোগ গ্রহন করে। কিন্তু ওই নতুন রাস্তা করতে স্থানীয় আব্দুল আলীর ছেলে  আবু বকর সিদ্দিকী, মৃত আকবর খানের ছেলে ইয়াছিন আলী খান ও কালিপদ বিশ্বাসের ছেলে অরুণ বিশ্বাসের বসত বাড়ির কিছু অংশ ভেঙ্গে জায়গা ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। এ লক্ষ্যে এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নুর-এ-আলম সিদ্দিকী উল্লেখিত ব্যক্তিদেরকে ১০ফুট প্রস্থের নতুন রাস্তার জন্য বসত বাড়ির জায়গা ছেড়ে দিতে গত ২৭ আগস্ট  নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশপ্রাপ্ত হয়ে আবু বকর সিদ্দিকী টাঙ্গাইলের (কালিহাতী থানা) বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ২ সেপ্টেম্বর এলেঙ্গা পৌর মেয়রকে কেন অস্থায়ী ও অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয়া হবেনামর্মে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে পৌর মেয়র ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার ওই স্থানে নতুন রাস্তা বের করতে বসত বাড়ি ভেঙে দেয়ার উদ্যোগ নেন।

ভূক্তভোগী বাড়ির মালিক আলহাজ¦ আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, আমি সাবেক মেয়রের অনুমতি সাপেক্ষে পৌরসভার প্লান পাশ করে বসতবাড়ি ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছি। বর্তমান মেয়র ও তার বাহামভূক্ত লোকজনেরা জোরপূর্বক গুন্ডামি করে আমার বসতবাড়ি ও ওয়াল ভেঙে রাস্তা করতে চায়। আমি এ কর্মকান্ডে পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

এ বিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, আমরা কারো পক্ষে নই, আমরা শাান্তির পক্ষে। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে এর সুষ্ঠু সমাধান হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় ব্যক্তি জানান, পৌরসভায় জোরপূর্বক রাস্তা বের করা নতুন ঘটনা নয়। এর আগে পৌরসভার পাথাইলকান্দি এলাকায় আহমাদ মিয়ার বাড়ির দক্ষিণপাশে জোরপূর্বক আরসিসি পিলার ও গ্রেডভিমের উপর ১১ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ৯৩ফুট বাউন্ডারি ওয়াল কোন প্রকার পূর্ব নোটিশ ও অধিগ্রহণ ব্যতিত পৌর মেয়র তার লোকজন দিয়ে ভেঙ্গে দেয়। আহমাদ মিয়া প্রতিবাদ করলে তাকে মিথ্যা চাঁদাবাজী মোকদ্দমাসহ নানা প্রকার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় মেয়রের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খ অঞ্চল আদালতে মামলা দায়ের এবং নিরাপত্তা চেয়ে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছিলেন মৃত ডা. আব্দুল মান্নান মিয়ার ছেলে আহমাদ মিয়া।

অপরদিকে, গত ৬ মে ২০১৯ তারিখে পৌলী গ্রামের পৌর কর্মচারী মধুসুধন ঘোষের একক সুবিধার্থে জোর পূর্বক রাস্তা বের করতে যান পৌর মেয়র ও তার বাহামভূক্ত লোকজন। তখন বাড়ীর মালিক মহাদেব দাস মেয়রের চাহিদা মোতাবেক ৬ ফুট রাস্তার পরিবর্তে ৩ ফুট রাস্তা দিতে চাইলে সেখানেও জোরপূর্বক গাছকাটা ও বাড়ীঘর ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পরিবারের সকলের গায়ে হাত তুলেছিলেন। ঘটনার পর থেকে টাঙ্গাইল ম্যাটস্ এ কর্মরত ক্যাশিয়ার মহাদেব দাস লজ্জায় আর নিজ গ্রামে ফিরেননি। নির্মিত ওই রাস্তার কারণে পাশর্^বর্তী শতাধিক পরিবার চলাচলের মূল রাস্তায় হাটু পরিমান পানি জমে থাকায় তাদের ভোগান্তির সীমা নেই।

রাস্তাটি বাড়ীর মাঝখানে দিয়ে না দিয়ে মধু ঘোষ ও রাজকুমার ঘোষের বাড়ীর পেছন দিক দিয়ে আইল বরাবর নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলে মেয়র তার কোন কথা শোনেননি। ওই সময় মেয়র ও তার বাহামভূক্ত প্রায় শতাধিক লোক এসে অতর্কিতে মহাদেব দাস ও তার পরিবারের ওপর হামলা করে। পরে তারা পাশর্^বর্তী পৌর কর্মচারী মধুসুধনের বাড়ীতে ভূড়িভোজের আয়োজন করেন।

এ বিষয়ে এলেঙ্গা পৌরমেয়র নুর-এ-আলম সিদ্দিকীর মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


Search News




©2020 Daily matrichaya. All rights reserved.
Design BY PopularHostBD