মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৮:২০ পূর্বাহ্ন

আপডেট
*** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***                     *** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***

জগন্নাথপুরে মসজিদ নির্মাণে বাঁধা

জগন্নাথপুরে মসজিদ নির্মাণে বাঁধা

সিলেট প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে নতুন মসজিদ নির্মাণে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে একটি দু’তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করলে মুষ্টিকয়েক লোকজন মসজিদ নির্মাণ কাজের শুরুর দিকে একত্রিত হলেও বর্তমানে তারা বাঁধা হয়ে দাঁড়ান।এ ঘটনা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের পূর্ব তিলক এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭৫ বছর পূর্বে ‘পূর্ব তিলক পশ্চিমপাড়া গ্রামবাসীর নামাজ আদায়ের জন্য স্থানীয় বাদল খান নিজ বসত ভিটার প্রায় ১৫ গজ দূরে একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেন। মসজিদ নির্মাণের ৫ বছর পর তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর তার নাতী উসমান খান মসজিদ হস্তান্তরের নামে ১৯৫০ সনে মসজিদের জায়গা দখলে নেন এবং তার বাড়ির নিকটবর্তী তার দখলে থাকা অন্যদের এজমালী এস এ খতিয়ান নং ৩৭৪২, ডি পি ৭৮০, স্থিত এস এ দাগ ৩৪৪৭, আর এস দাগ ৩০৯৫, এস এ দাগ ৩৪৪৬ ও ৩০৯৪ আর এস দাগে ১৫২২ নং দলিল দ্বারা মোট এক পোয়া, পাঁচ যষ্টি, দশ পণ, দশ গ-া জায়গা গ্রামের কিছু সংখ্যক লোকজন নিয়ে নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করে দেন। তখন থেকে স্থানীয়দের মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। মতবিরোধের কারণে ওই মসজিদ থেকে লোকজন বের হয়ে তিনটি মসজিদ স্থাপন করেন। সম্প্রতি জনসংখ্যা বেড়ে উঠার কারণে নির্মাণকৃত ওই পুরাতন মসজিদে মুসল্লিদের জায়গায় সংকট দেখা দেয়। এজন্য গত ২৫-৩০ বছর পূর্বে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তখন জরাজীর্ণ এ মসজিদটির প্রসস্থ করার জন্য জায়গাও নির্ধারণ করেন স্থানীয়রা। কিন্তু ৩৪৪৭ নং দাগে পুরাতন কবরস্থান ও ৩৪৪৬ নং দাগে মসজিদের জায়গায় দুটি কবর করে ফেলেন আবুল কালাম খান। তিনি তার পিতা আবদাল খান ও মাতা মনোয়ারা বেগম এর ওয়াক্ফকৃত স্থানে কবর দেন। এনিয়ে স্থানীয়দের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। মতবিরোধকে কেন্দ্র কে নতুন মসজিদ নির্মাণ করার উদ্যোগ করেন স্থানীয়রা। তারা সর্বসম্মতিক্রমে অত্যান্ত সু-বিশাল মসজিদ ও মুসল্লীদের জায়গা সংকট কমিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। এ উদ্যোগ গ্রহণ করার পর কেউ কেউ স্থানীয় ঈদগাহের জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করার প্রস্তাবনা দেন। শরিয়াহ্ সেখানে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে কিনা সেটির জানারও আগ্রহ প্রকাশ করেন অনেকেই। হাদিসে সেখানে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে বলে ইসলামি দলিলে উল্লেখ আছে বলে জানান বেশ কয়েকজন আলেম।

এমন দলিল নিয়ে স্থানীয় মুরব্বীরা আবুল কালাম খান’র সঙ্গে দেখা করেন এবং ঈদগাহে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে বলে জানান। এসময় আবুল কালাম খান পল্টি মেরে পেলেন। তিনি বলেন পুরাতন পূর্ব তিলক পশ্চিমপাড়া শাহী জামে মসজিদ সংস্কার করলে তিনি আছেন ; অন্যতায় তিনি নেই। তখন পায়েঞ্চাতের লোকজন বললেন মসজিদের ওয়াক্ফকৃত ভূমিতে তুমি তোমার পিতা-মাতার কবর দিয়েছো। সেখানে তো যথেষ্ট জায়গা নেই। সেখানে মসজিদ সংস্কার করলে মুসল্লীদের জায়গা সংকট কমবে না। আমরা সবাই চাই মুসল্লীদের সুবিধাজনক স্থানে সম্মিলিত ভাবে মসজিদ হউক ; সেখানে সবাই একসাথে নামাজ আদায় করবো। তখন আবুল কালাম খান রাসুলউল্লাহ (স.) এর বর্ণিত বাণীর আলোকে বলেন ‘ঘরে ঘরে মসজিদ’ নির্মাণ করার বিধান রয়েছে। আপনারার চাইলে মসজিদ নির্মাণ করতে পারেন। এমন কথা শুনে পায়েঞ্চাতের লোকজন নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য জায়গা খোঁজা শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দা হিরন খান এমন সংবাদ পান। তখন পায়েঞ্চাতের লোকজনকে তিনি বলেন, আমার তিলক মৌজার জে এল নং ১২২, বি এস জে এল নং ১২০, এস এ ছাপা খতিয়ান ৩০১০, বি এস বুজারত খতিয়ান  ৩৪০৫, বি এস ডিপি খতিয়ান ১১৯৮, এস এ দাগ ৩০৯১, বি এস দাগ ৩০৮৭, বি এস খতিয়ান ১৪৭৭, এস এ দাগ ৩০৯১, ৩০৮৮ বি এস দাগে ১১ শতক জায়গা পূর্ব তিলক বায়তুল মা’মুর জামে মসজিদের নামে ওয়াক্ফ করে দেন। তার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে কোনো ধরনের আপত্তি ছাড়া দ্বিতলা বিশিষ্ট ‘পূর্ব তিলক বায়তুল মা’মুর জামে মসজিদ’ নির্মাণের সম্মিলিত উদ্যোগ নেন এবং চলতি বছরের ১০ এপ্রিল সোবাহানীঘাটস্থ শাহজালাল ইয়াকুবিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও সাহেবজাদায়ে ফুলতলী হজরত মাওলানা কমর উদ্দিন চৌধুরী মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেখানে স্থানীয় সকলেই উপস্থিত ছিলেন এবং সকল কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ছিলেন। হঠাৎ করে অধ্যাধুনিক এ মসজিদ নির্মাণ বন্ধ করতে উঠেপড়ে লেগে যান স্থানীয় শাহ আলম খান ও নুরুজ্জামান খান। তারা মসজিদ নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুনামগঞ্জের দারস্ত হন এবং ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৪ ধারায় মসজিদ নির্মাণ কাজ বন্ধ করেন আদালত। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে কয়েক লক্ষ টাকার বিল্ডিং নির্মাণের সামগ্রী নষ্ঠ হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মসজিদ কমিটি। এদিকে, নতুন মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উত্তেজিত পরিস্থিতি শান্ত করতে এলাকায় শালিশ বৈঠক অনুষ্টিত হলেও বিষয়টি নিষ্পতি হয়নি। তখন শালিশের সিদ্ধান্ত পায়েঞ্চাতের লোকজন মানলেও মানেন নি আবুল কালাম।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মসজিদ নির্মাণ বন্ধ করার দাবিতে আদালতে অভিযোগ দায়েরকারী শাহ আলম’র মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি এনিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এনিয়ে কথা হয় পূর্ব তিলক বায়তুল মা’মুর জামে মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আংগুর মিয়া বলেন, আমরা গ্রামের সকলকে নিয়ে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করি। মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তরস্থাপনকালে এলাকার সকল বাসিন্দা উপস্থিত ছিলেন। এখন হাতেগোনা কয়েকজন লোক প্রতিহিংসার বসত পুলিশের সুবিধা নিয়ে মামলা দায়ের করে এবং মসজিদ নির্মাণ কাজ আদালত দ্বারা বন্ধ করিয়েছে। ফলে আমরা মসজিদ নির্মাণে লোকসানের মুখে রয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা মসজিদ নির্মাণে প্রায় ২৮-৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ফেলেছি। আমরা চাই জনস্বার্থে মসজিদ নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু করা হউক।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ইচ্ছা আছে মসজিদটি নির্মাণ করা হলে বয়স্ক কোরআন শিক্ষা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এবিষয়ে আবুল কালাম খানের মন্তব্য জানতে চাইলে তাকে পাওয়া যায় নি।

এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী দৈনিক মাতৃছায়াকে বলেন, প্রথমে আমাদের কাছে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আসা হলে নতুন মসজিদ কমিটির দায়িত্বশীলরা আসলেও শাহ আলম আসেনি।  পরে আদালত কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারি হলে আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছি।


Search News




©2020 Daily matrichaya. All rights reserved.
Design BY PopularHostBD