বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
সুমন হোসাইনঃ
অফিস অব্যবস্থাপনা ও কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দূর্নিতীর মুখে জিম্মিদশায় পরিনত হয় যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-০১ অধিনস্ত বেনাপোল সাব-জোনাল অফিসের কার্যক্রম। ফলে সেবার বীপরীতে গ্রাহক হয়রানী চরমে পৌঁছাই। এই অনিয়ম নিয়ে গত ২৭ জুলাই দৈনিক মাতৃছায়া,দৈনিক জন্মভূমি,দৈনিক সকালের সময়,দৈনিক গ্রামের কন্ঠ প্রিন্ট পত্রিকাসহ একাধিক অনলাইন পোর্টালে “বেনাপোল জোনাল অফিসে দালাল ছাড়া মেলেনা বিদ্যুৎ সংযোগ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই টনক নড়ে পল্লী বিদ্যুৎ এর কর্তা ব্যাক্তিদের।
মঙ্গলবার (১লা আগস্ট) বেনাপোল সাব জোনাল অফিস এলাকায় দালাল মুক্ত সেবা গ্রহণ করতে প্রচার মাইক ছাড়া হয় এবং গ্রাহক সচেতনাতায় লিফলেট বিতরণ ও সেবা গ্রহিতাদের কাছ হতে সেবা সম্পর্কে সাক্ষর গ্রহণের উদ্যেগ নিয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে বেনাপোল সাব জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজোর আসাদুজ্জামান জানান,বেনাপোল অফিস সম্পূর্ণ দালাল মুক্ত ও গ্রাহক বান্ধব অফিস। দুটি পত্রিকায় বেনাপোল সাব-জোনাল অফিস নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ভিত্তিহীন। আমরা ইতিমধ্যে পত্রিকার সম্পাদককে প্রতিবাদলিপি প্রদান করেছি। গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধিতে এলাকায় মাইকিং শুরু করেছি। লিফলেট বিতরণ ও গ্রাহক মোটিভেশন সভা করার মত উদ্যেগ গ্রহণ করেছি। প্রকাশিত খবরের সত্যতা যাচায়ে সরেজমিনে এলাকায় খোঁজ খবর নিলে পল্লী বিদ্যুৎ এর সাব-জোনাল অফিসে দালালের আধিপত্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
বুধবার (২ আগস্ট) সকালে বেনাপোল পৌরসভার বড়আঁচড়া গ্রামের বেনাপোল সাব-জোনাল অফিসে সেবা নিতে আসা গ্রাহক ইমানুর জানান হয়রানী এড়াতে পল্লী বিদ্যুৎতের দালাল লুৎফরের সাথে যোগাযোগ করে ২ দফায় ৩২ শো টাকা দিয়ে গত ১লা জুন নতুন সংযোগ পেতে অনলাইনে (ট্রাকিং-০১০১১২৩০০৭৯৭) আবেদন করি। অধ্যবধী সংযোগ না পেয়ে আজ অফিসে এসে আমি সরাসরি কর্মকর্তাকে বিস্তারিত খুলে বলি। তিনি আমার আবেদন সংক্রান্ত কাজ এপ্রোভাল করে ভবিষ্যতে দালালে খপ্পরে না পড়ে অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। অভিযুক্ত দালাল লুৎফরের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে অভিযোগকারী ইমানুরের সাথে কথা বলবেন বলে আশ^স্ত করেন এবং তিনি আগে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কর্মকর্তাদের দালালী করতেন এখন আর করেনা বলে জানান। অপর ভূক্তভোগী মেহেদী মাসুদ জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারী-২৩ সালে তিনি নতুন সংযোগ প্রাপ্তিরজন্য অনলাইনে (ট্রাকিং নং-০১০১১২৩০০৩৩১) আবেদন করেন। ওয়্যারিং সঠিক নহে উল্লেখ্য করিয়া আমার আবেদন বাতিল করা হয়। অথচ ঐ বাড়িতে আমার পিতার নামে মিটার রয়েছে। কেবলই বেনাপোল সাব-জোনাল অফিসের কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও দালাল না ধরায় আমার আবেদন বাতিল হয়েছে। যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দায়িত্বরত জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আবুবকর শিবলী বলেন কোন গ্রাহক এখনো পর্যন্ত অভিযোগ করেনী। যেকোন কর্মকর্তা অনৈতিক লেনদেনে জড়িত থাকলে উপযুক্ত প্রমান পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিবো।
বেনাপোল সাব-জোনাল অফিস সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর বিষয়ে অবগত আছেন জানিয়ে বেনাপোল অফিস প্রধানকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে আরো জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেনাপোল সাব-জোনাল অফিসের এক দালাল জানান,টাকা ছাড়া কোন কর্মকর্তা ফাইলে সই করেনা। ওয়্যারিং রিপোর্ট পাশে ৫০০/-,আবেদন মঞ্জুরে ৬০০/- লাইন সংযোগ দিতে ৩০০/- এমনি ভাবে কর্মকর্তারা টাকা পেলে ৫/৭ দিনে নতুন সংযোগ পাই আবেদনকারী। আমরা গ্রাহকদের কাছ হতে যে টাকা নিই তার সিংহভাগ পাই পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা। তারা আমাদের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করলেও গ্রাহকদের কাছে খারাপ হই আমরা। উল্লেখ্য বেনাপোল সাব-জোনাল অফিস শার্শা পল্লীবিদ্যুৎ অফিস হতে বিভক্তির পর হতেই জিম্মীদশা ও গ্রাহক হয়রানী বেড়েছে।