সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন
গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি: পক্ষের মাঝে মারামারিতে ছানিম (১২) নামের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র নিহত হয়েছে। সে হরিরামপুর ইউনিয়নের বড়দহ পূর্বপাড়া গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ। ৪ নভেম্বর বুধবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে বড়দহ কানিপাড়া গ্রামে প্রায় দুই বিঘা জমি নিয়ে পূর্ব থেকে চলা দ্বন্দ্বে নিহতের ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার শুরুতে শুকরু মিয়ার ছেলে শহিদুল ইসলাম ও ভোলা মিয়ার ছেলে সাদা মিয়াদের মাঝে বাগ-বিতণ্ডা শুরু হয়। উত্তেজিত উভয়পক্ষ প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ঢিল ছোড়াছুড়ি করতে থাকে। একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে নিহত ছানিম বাড়ির বাহিরে বের হলে প্রতিপক্ষ সাদা মিয়ার লোকেরা লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এক আঘাতেই চিৎকার দিয়ে সে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার সময় মারপিটের ঘটনায় উভয় পক্ষের একাধিক ব্যক্তি আহত হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে মৃত নইমুদ্দিনের ছেলে মোফাজ্জল (৪০), সাইবুদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাদের (৩৭), শাখাওয়াত (৩৬) ও শাখাওয়াতের স্ত্রী শোভা বেগম (৩৩)।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৫ সালে কবলামূলে প্রায় দুই বিঘা জমি ক্রয় করেন ভোলা ও মৃত শুকরু মিয়ার বাবা। জমি ক্রয়ের পর থেকে পুকুর ও আবাদি জমি একত্রে দেড় বিঘা ভোলার ওয়ারিশ হিসেবে তার ছেল সাদা, সাহারুল গংরা দখল ভোগ করে আসছিল। যা বর্তমান মাঠ জরিপেও তাদের নাম জারি আছে।
এদিকে ঐ দুই বিঘা জমির ১৯৩৭ সালের একটি কবলা দলিল মূলে অপর ভাই শুকরু মিয়ার ছেলে শহিদুল ইসলাম গংরা দাবি করতে থাকে। এ নিয়ে সাদা গং ও শহিদুল গংদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ শুরু হয়। একই জমি দুই ভাইয়ের নামে আলাদা আলাদা দুটি দলিল প্রকাশ হলে এলাকায় বেশ কিছু শালিস বৈঠকে এর সমাধান হয়নি বলে গ্রামবাসী জানান। এই অমিমাংসিত বিষয় নিয়েই মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি তদন্তের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। অপরদিকে কর্তব্যরত অফিসার এসআই সজিবুর রহমান সজিবের সাথে কথা বললে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। পাশাপাশি এ ঘটনায় ২ জনকে আটকের কথাও জানান তিনি। আটক ব্যক্তিরা হলেন, একই গ্রামের ভোলা মিয়ার ছেলে সাদা মিয়া ও শাহারুল। লাশ ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ রিপোর্ট পর্যন্ত সাদা গংরা চিকিৎসার জন্য বাহিরে অবস্থান করায় তাদের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটতরাজের খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তে স্থানীয় গ্রাম্য পুলিশ উক্ত স্থানে তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। এদিকে এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।