বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন

আপডেট
*** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***                     *** সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698  ***              সিসি ক্যামেরা সিস্টেম নিতে যোগাযোগ করুন - 01312-556698 ***

বেনাপোলে ৩ সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স স্থগিত

বেনাপোলে ৩ সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স স্থগিত

সুমন হোসাইনঃ
রাজস্ব ফাঁকিতে জড়িত থাকায় বেনাপোল স্থল বন্দরে ৩ সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স স্থগিত করেছে কাস্টমস হাউজ বেনাপোল। একই সাথে রাজস্ব ফাঁকি কাজে জড়িত বেশ কয়েকটি সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীকে সনাক্ত করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। স্থগিত হওয়া তিন সিএন্ডএফ এজেন্টরা হলো মেসার্স রিয়াদ এজেন্সি,মেসার্স সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্ট লিঃ এবং মেসার্স রহমত ইন্টারন্যাশনাল।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর রহমান তিন সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীর লাইসেন্স স্থগিতের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান ওজন জালিয়াতির অপরাধে মেসার্স রিয়াদ এজেন্সির লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া মেসার্স সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্ট লিঃ এবং মেসার্স রহমত ইন্টারন্যাশনাল নামে দুটি লাইসেন্স মিস ডিক্লারেশনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা যায়,ভারত হতে আমদানিকৃত পণ্য চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের সময় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ট্রাক টার্মিনালের ওয়েব্রিজ স্কেলে ট্রাকসহ পণ্যের গ্রোস ওজন করা হয়। বন্দরে পণ্য নামানোর পর খালিট্রাকের ওজন বাদ দিয়ে পণ্যের নিট ওজন নিশ্চিত করে ওজন স্লিপ দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ করে দুটি পন্য চালানের একই স্লিপ দেখে ওজনের গড়মিল পাওয়ায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা বন্দরের ০৪/০৫ নং ওয়ে ব্রিজে অভিযান পরিচালনা করে ওজনের কারসাজিতে দেখতে পাই। ০৪/০৫ নং ওয়ে ব্রিজে পূর্বের কোন পন্যের রেকর্ড নাই যাহার নিয়ন্ত্রন করছেন বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সাথে খালি ট্রাকের ওজনের ও গড়মিল পাওয়া যায়। যার ফলে বিগত কয়েক মাসে বেনাপোল স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের সরবারহকৃত ওজন স্লিপে অনৈতিক সুবিধায় পণ্যের ওজন কমিয়ে অথবা অবিকল নকল ওজন স্লিপ সংযুক্ত করে বন্দর হতে পণ্য খালাস নেওয়ার কারনে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে।

এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের লাইসেন্স কর্তৃপক্ষ যুগ্ন কমিশনার মোঃ শাফায়েত হোসেন গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, রাজস্ব ফাঁকি দিতে নকল ওজন স্লিপ ও পণ্যের ওজন কমিয়ে খালাস নেওয়া এ ধরনের ৭/৮টি সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠানকে আমরা সনাক্ত করেছি। এবং শুল্ক ফাঁকির সাথে জড়িত ০৩ সিএন্ডএফ মেসার্স রিয়াদ এজেন্সি,মেসার্স সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্ট লিঃ এবং মেসার্স রহমত ইন্টারন্যাশনালে লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।

স্থগিত হওয়া মেসার্স রহমত ইন্টারন্যাশনালের মালিক ইব্রাহিম জ্যাকি মোঃ রহমত উল্ল্যাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, আমার আমদানি কৃত সামদ্রিক মাছকে নদীর মাছ বলে কাস্টমস আটক করে। এছাড়া মাছের পন্য চালানটি মাৎস কর্মকর্তাদ্বারা পরীক্ষা করিয়ে আনলেও কাস্টমস্ সেটা মানেননি।

মেসার্স রিয়াদ এজেন্সির মালিক মোঃ মনিরুল আলম মনিরকে মুঠোফোনে লাইসেন্স স্থগিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যাস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।

মেসার্স সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্ট লিঃ বিলকিস সুলতানা সাথিকে ফোন করলে সাক্ষাৎ পাওয়া যাইনি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্ট লিঃ লাইসেন্সটি খালিদ বিভারেজের শান্ত নিয়ে কাজ করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পরিছন্ন সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই বেনাপোল স্থল বন্দর এলাকায় কাস্টমস,বেনাপোল স্থলবন্দরের কিছু ওসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় সিএন্ড এফ ব্যবসায়ী যোগসাজে সিন্ডিগেট গড়ে ওজন কম দেখিয়ে বন্দর থেকে পণ্য খালাস নিয়ে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে। ওজন স্লিপ জালিয়াতি ঘোষণা বর্হিভূত পণ্য কিংবা মিথ্যা ঘোষণাকৃত আমদানি পণ্য বন্দর হতে সহসায় খালাস নিয়ে যাচ্ছিল। বিপুল অঙ্কের অর্থবানিজ্যে অসাধু কাস্টমস্ কর্মকর্তারা সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীদের অপরাধের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত না করায় দূর্নীতি মুক্ত হয়নি বেনাপোল স্টেশনটি।
বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লাইসেন্স স্থগিত হওয়া প্রতিষ্ঠান গুলোর ব্যপারে সরেজমিনে জানা গেছে গত জুলাই মাসে মেসার্স সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্ট লিঃ ৯৫ টি বিলঅফ এন্ট্রি, মেসার্স রিয়াদ এজেন্সি ১০টি এবং মেসার্স রহমত ইন্টারন্যাশনাল সব থেকে বেসি ৯৭টি বিলঅফ এন্ট্রি ছাড় করে নিয়ে গেছেন। খোঁজ নিয়ে রহমত ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্তাধীকারী বাড়তি সুবিধায় আমদানি-রপ্তানীকারকের পচনশীল (মাছ)পণ্য খালাস করেই অল্পদিনে কোটিপতি বনেছেন। এছাড়া সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স ব্যবহারকারী শান্ত বিভিন্ন সময় অব্যবহৃত অলস লাইসেন্সের মালিকদের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের লাইসেন্স ব্যবহার করে জিরো থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

উল্লেখ্য ওজন স্লিপ দূর্নীতি ঘটনায় বেনাপোল স্থলবন্দরের ৫ কর্মকর্তাসহ ৬ জনকে বদলী করা হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। গত ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাদের বদলি করা হয়েছে। যদিও বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বলেন বন্দরের কর্মকর্তাদের বদলী স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এছাড়া সফটওয়্যারের জটিলাতার বিষয়ে জানতে চাইলে সফটওয়্যার আপডেট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান।


Search News




©2020 Daily matrichaya. All rights reserved.
Design BY PopularHostBD