বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১২ অপরাহ্ন
আল্লাহর ভয় অর্জনের মাস রমজান। ধীরে ধীরে তাওকয়া অর্জনের এ মাস শেষ হয়ে আসছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২ মাস আগে থেকেই রমজানের ইবাদত-বন্দেগির প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। আর রমজান মাস জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ইবাদতে অতিবাহিত করতেন।
রহমত লাভ গোনাহ মাফ এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির মাস রমজান। এ মাসের অন্যতম ফজিলতপূর্ণ কাজ হলো ইফতারের জন্য অন্য রোজাদারকে দাওয়াত দেয়া, পরস্পরকে ইফতার বিতরণ করা। বিশেষ তা যদি হয় গরিব-অসহায়ের জন্য তবে তা হবে সর্বোত্তম কাজ। হাদিসে এসেছে-
‘যে অন্য রোজাদারকে ইফতার করাবে, বা ইফতারি বিতরণ করবে সেও তার সমান সওয়াব পাবে। এতে ইফতারকারীর সাওয়াব থেকে কিছুমাত্র কমানো হবে না।’
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়ে ওঠার জন্য রমজান মাসব্যাপী ইবাদত বন্দেগি করতে গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি নিজে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটিয়েছেন রমজান মাস। যা তাঁর উম্মতের জন্য সুমহান শিক্ষা।
আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে বিশ্বনবির শেখানো যে কাজগুলো করা জরুরি–
>> রমজানের আল্লাহর জিকির করা দিন-রাত অতিবাহিত করা।
>> বেশি বেশি কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত ও তাফসির পড়া।
>> অসহায়, গরিব-দুঃখী মানুষকে ইফতার ও সাহরি করানো।
>> রমজান মাসজুড়ে বেশি বেশি দান-সাদকা করা।
>> বিগত জীবনের গোনাহ মাফে রমজানে রাতের (তারাবিহ) নামাজ পড়া।
>> বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফার করা।
>> আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দান-সহযোগিতা করা।
>> অসুস্থ মানুষের সেবা ও সহযোগিতা করা।
>> পরিবার ও সমাজের লোকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
>> আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না করা।
>> মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ ও মাগফেরাত কামনা করা।
>> খেজুর দিয়ে সাহরি ও ইফতার করা। খেজুর পাওয়া না গেলে সাদা পানি পান করার মাধ্যমে তা আরম্ভ করা।
>> সাহরি ও ইফতারের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা।
>> সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা এবং শেষ রাতে ভোর হওয়ার আগ মুহূর্তে সাহরি খাওয়া।
>> রোজায় মেসওয়াক করা। তা দিনের যে কোনো সময়ে হোক তাতে কোনো অসুবিধা নেই।
>> ঝগড়া বিবাদ না করা। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখা এবং নিরবতা অবলম্বন করা। কেউ ঝগড়া করলে এ কথা বলা- ‘আমি রোজাদার, আমি রোজাদার’।
>> রমজানের রাতের নামাজ অর্থাৎ ইশার নামাজ আদায়ের পর তারাবিহ নামাজ আদায় করা। কেউ এ নামাজকে সুন্নাত বলেছেন, আবার অনেকে মোস্তাহাব বলেছেন। তবে হাদিসে এসেছে-
‘যদি কোনো ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সাওয়াবের নিয়তে রমজানের রাতের (তারাবিহ) নামাজ পড়বে, আল্লাহ ওই ব্যক্তির বিগত জীবনের সব গোনাহ মাফ করে দেবেন।’
>> রমজানে ওমরা করা সুন্নাত। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের একটি ওমরা আদায়ে হজের সমান সাওয়াব রয়েছে।’
>> রমজান মাসের শেষ দশকে ইবাদতের উদ্দেশ্যে গোনাহ মাফের মাধ্যমে জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত পেতে মর্যাদাপূর্ণ রাত ‘লাইলাতুল কদর’ তালাশে মসজিদে ইতেকাফে বসা। রোজা ফরজ হওয়ার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আজীবন ইতেকাফ করেছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রোজা পালনের পাশাপাশি বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেখানো আমলগুলো যথাযথ আদায় করে রহমত বরকত মাগফেরাত ও জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। বিগত জীবনের সব গোনাহগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।