রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০১ অপরাহ্ন
১.অস্টেওসারকোমা অস্থির টিউমারগুলোর মধ্যে খুব খারাপ ধরনের বা ক্যান্সার জাতীয় একটি টিউমার। এই রোগ হলে মৃত্যুর আশংকা খুবই বেশি। সাধারণত ৯ থেকে ১৬ বয়সের শিশুদের এ রোগটি হয়ে থাকে। হাঁটুতে অস্টিওসারকোমা হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, বাহুর হাড়েও অস্টিওসারকোমা হবার হার উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। হাড়ের যে অংশটা ক্রমবর্ধমান থাকে সেই অংশে এই টিউমারটির আবির্ভাব ঘটে। ধীরে ধীরে তা অস্থির অন্য অংশে বা অন্য অস্থিতে বা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
শুরুতে হাড়ের কোনো একটা অংশ ফুলে যাওয়া এবং সেই সাথে ব্যথা হওয়াই এই রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়, সাধারণত বাচ্চারা কোনো আঘাত পাবার পর পর এমন লক্ষণ দেখা দেয়ায় অভিভাবকেরা অনেক সময়ই এই লক্ষণ টিকে গুরুত্ব দেন না এবং শিশুর রোগটি সবার অজান্তে বাড়তে বাড়তে জটিল হতে থাকে।
এক্সরে করলে অস্টিওসারকোমার উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। তবে রোগটির অবস্থান নিশ্চিত করতে এম,আর,আই এবং বোন স্ক্যান করারও প্রয়োজন দেখা দেয়। বায়োপ্সি করলে এই রোগটি সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়। অর্থোপেডিক সার্জনগণ এই ধরনের রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। শুরুর দিকে রোগটি নির্ণয় করা গেলে টিউমার জনিত অংশটি কেটে ফেলে দিয়ে এবং একধরনের কেমোথেরাপী দিয়ে রোগীর জীবন বাচানো সম্ভব হয়। রোগটি জটিল হয়ে ছড়িয়ে পড়লে রোগীর অবস্থা আশংকা জনক হয়ে যায় এবং রোগীর প্রাণহানী ঘটতে পারে।
২.কন্ড্রোসারকোমা তরুণাস্থি বা কার্টিলেজের ক্যান্সার জাতীয় একটি টিউমার, ক্যান্সার জাতীয় হলেও এটা তেমন ভয়াবহ ধরনের কোনো রোগ নয়। সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে এই রোগটি হতে দেখা যায়। রোগটি হলে সেই স্থানের হাড় কিছুটা ফুলে যায় এবং সেখানে হাল্কা ব্যথা অনুভব হতে থাকে। ফোলা অংশটি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে এবং অনেক মাস পরে রোগী বুঝতে পারে যে তার হাড়ে একটি রোগ হয়েছে।
এক্সরে করে কন্ড্রোসারকোমার উপস্থিতি সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। তবে এর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে এবং এটা কতটা ছড়িয়ে পড়েছে তা বোঝার জন্য সিটি স্ক্যান এবং এম,আর,আই করার প্রয়োজন আছে। এটা সত্যিই ক্যান্সার জাতীয় টিউমার কিনা তা বোঝার জন্য অবশ্যই বায়োপসি করে তা নিশ্চিত করতে হয়।
কন্ড্রোসারকোমা কখনো কখনো পুরোনো কোনো নীরিহ টিউমার থেকে রূপান্তরিত হয়ে হতে পারে আবার কখনো এটি একদম নুতন করেও হতে পারে। এর উৎপত্তি যেভাবেই হোকনা কেন চিকিৎসা কিন্তু একই। রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপি এর উপড় খুব একটা কাজ করেনা। সার্জারিই এর একমাত্র চিকিৎসা, সার্জারি করে টিউমারটি ফেলে দিলে এই রোগ পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়।