বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ অপরাহ্ন
ইরানের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় রণতরির পর এবার মধ্যপ্রাচ্যে নতুন প্রযুক্তির প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান নতুন প্রযুক্তির এই ক্ষেপণাস্ত্র মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েনের বিষয়টি অনুমোদন করেছেন।
ইরান হামলা চালাতে পারে—এমন মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রণসাজে সজ্জিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইরানের উদ্দেশে রণতরি নিয়ে লোহিত সাগরের সুয়েজ খালে অবস্থান নিয়েছে মার্কিন নৌবহর; যদিও ইরান মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে ভুয়া বলে দাবি করেছে।
আজ শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনে ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কতসংখ্যক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে, তা তিনি জানাননি। রেথিয়ন কোম্পানির তৈরি এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রকে ভেদ করতে পারে।
মাত্র কয়েক মাস আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর বেশ কয়েকটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরিয়ে নিয়েছিল। এখন নতুন করে ওই অঞ্চলে আবার মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছর ওই প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, বিভিন্ন দেশে মোতায়েন মার্কিন সামরিক বাহিনীর ব্যাপক হারে শক্তি প্রয়োগে ভারসাম্য আনার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পেন্টাগন রাশিয়া ও চীনের সামরিক চ্যালেঞ্জকে অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছে।
এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছিল, মার্কিন বাহিনীকে বা মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানার পরিকল্পনা ইরানের রয়েছে বলে তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আভাস দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আব্রাহাম লিংকন রণতরি এবং বোমারু বিমান মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন নৌবাহিনীর বাহরাইনভিত্তিক নৌবহরের কমান্ডার ভাইস অ্যাডমিরাল জিম ম্যালয় রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, ইরানের হামলার জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনে হরমুজ প্রণালিতে রণতরি পাঠাবে। তবে ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন নামের রণতরিটি ইরানের এই জলপথে কবে নাগাদ পাঠাবেন, তা তিনি জানাননি। গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি তেল সরবরাহে বিশ্বে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ইরানের রপ্তানি বাজারে ধস আনতে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি দেশকে ইরানের তেল না কেনার নির্দেশ দিয়েছে। এ নির্দেশ না শুনলে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের মুখোমুখি হতে হবে দেশগুলোকে।
যুক্তরাষ্ট্র এর মধ্যে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর শাখা দ্য ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসকে (আইআরজিসি) জঙ্গি সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে এবং তেল রপ্তানিতে ইরানকে হটিয়ে দিতে দেশটির ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপে চাপ সৃষ্টি করেছে।
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করা ছয়টি দেশের মধ্যে বছরখানেক আগে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় এবং দেশটির ওপর অর্থনৈতিক বিধি–নিষেধ আরোপ করে।