মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
ছোট ভাইয়ের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় অব্যাহতি পেয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি।
মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক রোকনুজ্জামান ন্যান্সিকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
ন্যান্সির পক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অ্যাডভোকেট জীবন কুমার সরকার। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সরকারী পিপি।
অব্যাহতি প্রসঙ্গে ন্যান্সির আইনজীবী জীবন কুমার সরকার যুগান্তরকে বলেন, তারা যে দুইজনকে আসামি করেছে, মূলত তাদেরকে হয়রানি করার জন্য, তাদের কিছু স্বার্থ সিদ্ধির জন্য আমার মক্কেলদের আসামি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ন্যান্সির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। শুধুমাত্র হয়রানি করার জন্য তাদেরকে আসামি করা হয়েছিল। এই মামলায় এমন কোনো উপাদান নেই, যে কারণে তাদেরকে আদালত শাস্তি দিবে। তাই বিচারক ন্যান্সিকে অব্যাহতি দিয়েছে।
অব্যাহতি পেয়ে ন্যান্সি যুগান্তরকে জানান, আজকে যে মামলায় আমাকে আদালত পর্যন্ত আসতে হয়েছে সেই মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হওয়ার কারণেই আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে।এ মামলায় আদালত অব্যাহতি দিয়ে প্রমাণ করেছেন আসলে সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র আমার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য এই সাজানো মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। যার কোনো ভিত্তি নাই।
মানহানির মামলা করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ন্যান্সি বলেন, এখনই আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। কারণ আমার পরিবার আছে, আমার শ্বশুর শাশুড়ি আছে, সবার সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেব। তবে আমি এটা নিঃসন্দেহে বলতে পারি শুধুমাত্র আমাকে হেরেজ করার জন্যই এ মামলা করা হয়েছে।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর নারী নির্যাতনের এ মামলায় জামিন পেয়েছিলেন কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি ও তার স্বামী নাজিমুজ্জামান জায়েদ।
ওইদিন মামলার আসামি ন্যান্সি ও জায়েদ উচ্চ আদালতের নির্দেশে নেত্রকোণার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলী মাসুদ শেখের আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
ওইদিন জামিন পেয়ে কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি যুগান্তরকে জানান, এ বিজয় আমার না, এ বিজয় সকল নারীর। নির্যাতনের নামে যারা স্বামীদেরকে হেরেজ করে, ব্লেম করে তাদের দ্বারা আর যাই হোক সংসার হয় না।
তিনি বলেন, স্বামী–স্ত্রী এক ছাদের নিচে থাকলে সংসারে মান–অভিমান, মনোমালিন্য হয় কিন্তু যে নারী এতটা নিচে নামতে পারে তার সঙ্গে কখনো সংসার হয় না।
মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এ মামলায় জামিন হওয়ায় ষড়যন্ত্রকারীদের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। তাদের মুখ ছোট হয়ে গেছে। তাদের কাছে মূল আকর্ষণ ছিলাম আমি, তারা আমাকে যে কোনো মূল্যে কারাগারে পাঠাতে চেয়েছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি।
অব্যাহতি পাওয়ার পর আইনজীবী ও স্বামীর সঙ্গে ন্যান্সি
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রাতে ন্যান্সির ভাই সানির তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী সামিউন নাহার শানু নেত্রকোনা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় সানির পাশাপাশি ন্যান্সি ও তার স্বামী জায়েদকে আসামি করা হয়। পরে ওইদিন রাতেই সানিকে নেত্রকোনা শহরের সাতপাই এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে ১৫ সেপ্টেম্বর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন শানু’র ভাই সোহাগ আহমেদ। জিডিতে তিনি ন্যান্সি ও জায়েদের বিরুদ্ধে শানুসহ পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ তোলেন।
এর আগে ন্যান্সি হাইকোর্ট থেকে নিজের ও স্বামীর জন্য চার সপ্তাহের আগাম জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।